সেন্ট লুইস মাধ্যমিক বিদ্যালয় |
স্বর্গীয় ফাদার ভ্যালেরিয়ান কল্পের অনির্বাণ কীর্তি হলো সেন্ট লুইস মাধ্যমিক বিদ্যালয়। অত্র বিদ্যাপীঠ বহুক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার। ১৯৭০ খ্রীষ্টাব্দে ১লা জানুয়ারী স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ের মোট জমির পরিমান ২ একর ৪২ শতক। স্কুলের প্রথম প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন ইতালীর জাভেরিয়ান পুরোহিত ভ্যালেরিয়ান করে। ১৯৭২ খ্রীষ্টাব্দে বিদ্যালয়ের পরিচালনার প্রথম সাংগঠনিক কমিটি তৈরী হয়েছিল এ রকম প্রধান শিক্ষক ফাদার ভ্যালেরিয়ান করে, সম্পাদক: দান্তে তালুকদার, সদস্য: মার্কুশ বৈরাগী ও মো: গোলাম হোসেন। ১৯৭২ খ্রীষ্টাব্দের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানানো হলো যে কোন বিদেশী প্রধান শিক্ষক হিসেবে কোন স্কুলে থাকতে পারবে না। তাই ১২ই জুন ১৯৭৪ খ্রীষ্টাব্দের ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ফাদার করে পদত্যাগ পত্র দেন এবং মি: পিটার সুভাষ পাড়ৈ ১৫ই জুন, প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। মি: দান্তে তালুকদারের সহযোগীতায় ১৯৭৩ খ্রীষ্টাব্দে ফেব্রুয়ারী মাসে প্রথম অডিট হয়েছিল। কাজল এন্ড কো: দ্বারা। ১৯৭৪ খ্রীষ্টাব্দে ৯ম শ্রেণী খোলা হয়। বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় জাহিদুল ইসলামকে। ১লা জানুয়ারী ১৯৮০ খ্রীষ্টাব্দে অ্যান সরকার প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১লা এপ্রিল, ১৯৮৪ খ্রীষ্টাব্দে জাহিদুল ইসলাম প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১লা জুলাই, ২০০৭ খ্রীষ্টাব্দে ফাদার যোসেফ নরেন বৈদ্য প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি সাহিত্য, বিজ্ঞান চৰ্চা খেলাধূলা, ধর্মীয় নৈতিক মূল্যবোধ, চিত্তবিনোদনমূলক ও সাংস্কৃতিক শিক্ষা এ দিকগুলোর উপর যথেষ্ঠ গুরুত্ব দান করে আসছে। এই বিদ্যালয় থেকে অসংখ্যা ছাত্র-ছাত্রী শুধু জ্ঞানই অর্জন করেনি, অধিকন্তু তারা পেয়েছে চরিত্রবাণ ব্যক্তি হবারও শিক্ষা। দেশের অর্থনীতি ও সামাজিক ক্ষেত্রে উত্তম নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় এই স্কুলের প্রাক্তন বেশ কিছু ছাত্র-ছাত্রীকে। " একা গড়ে না কেউ, গড়ে অনেকে মিলে”।
সেন্ট লুইস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান উন্নত পর্যায়ে আনার পিছনে রয়েছে অনেকের অবদান। বিশপ মাইকেল এ ডি' রোজারিও, সিএসসি, ফাদার ব্রুনো স্ত্রী. মি. দান্তে তালুকদার এবং আরো অনেক সুযোগ্য ব্যক্তির সহযোগীতায় স্কুলের উন্নয়ন তরান্বিত হয়। শিক্ষকদের সৃষ্টিশীল পরিশ্রম এবং অভিভাবকদের অকুণ্ঠ সহযোগীতার ফলে ক্রমশ আদর্শ বিদ্যাপীঠ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। খেলাধুলা, স্কাউটস, সাংস্কৃতিক বিকাশ এবং সামাজিক কার্যক্রম স্কুলটিকে অত্র শিমুলিয়া এলাকার মহিরুহ হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। ১৯৭৬ খ্রীষ্টাব্দে ৪ জন ছাত্র ৫জন ছাত্রী মোট ৯ জন প্রথম এসএসসি পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়। নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের মধ্যে স্কুলটি যেন প্রাকৃতিক শিক্ষা কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
লেখক : হুমায়ূন কবীর নয়ন