[ভূমিকা] • কালান্তরের রূপকথা • ধারাবাহিক উপন্যাস

'কালান্তরের রূপকথা' উনিশ শতের মাঝামাঝি থেকে গত শতাব্দীর প্রথমভাগে বৃহত্তর যশোর জেলার রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে রচিত। উপন্যাসটিতে বড় ক্যানভাসে উঠে এসেছে ঝিকরগাছার ইতিহাস। এর প্রতিটি ঘটনা ও চরিত্র বাস্তব।

উপন্যাসটি থেকে জানা যাবে তৎকালীন ঝিকরগাছা তথা যশোর জনপদের সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক অবস্থা সম্পর্কে। আরও জানা যাবে এ অঞ্চলের সেই সব কিংবদন্তিতুল্য মানুষের কথা যাদের চেষ্টা ও সাধনায় যশোরাঞ্চলের নিয়তি নির্ধারণ হয়েছিল। 

প্রতিটি অঞ্চলের মানুষের থাকে স্বকীয় ভাষা, সংস্কৃতি, আচার অনুষ্ঠান। থাকে স্বকীয় অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থান। কালের পরিবর্তনে একদিন তা সবই মুছে যায়। পায় নতুন রূপ। বদলায় পথ, বদলায় মত, বদলায় ভাষা। সবই বদলে যায়। সৌভাগ্য এই যে, আমাদের একজন হোসেনউদ্দীন হোসেন আছেন। যার বদৌলতে আমরা আমাদের অতীত কালের আখ্যান জানতে পারছি 'কালান্তরের রূপকথা'র মাধ্যমে।

ঝিকরগাছাডটকম বরাবরই চেষ্টা করছে এ জনপদের অতীত ইতিহাস-ঐতিহ্য বর্তমান উত্তরাধিকারদের কাছে তুলে ধরার পাশাপাশি বর্তমান সময়কে যতটুকু সম্ভব ধারণ কিংবা লিপিবদ্ধ করে রাখবার।

তারই অংশ হিসাবে এখন থেকে প্রতি বৃহষ্পতিবার রাত ০৮:৩০টায় আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে 'কালান্তরের রূপকথা'। ঝিকরগাছা তথা যশোর জেলার সচেতন পাঠক তাদের পূর্বপুরুষ ও ইতিহাস সম্পর্কে জানতে নিয়মিত তা পড়বে এইটুকু আশা করি। 
• তানজুম সাকিব, ঝিকরগাছাডটকম


ভূমিকা
কালান্তরের রূপকথা উপন্যাসটির পটভূমি— 'যশোহর'। এই জেলার কিংবদন্তি, লোককথা, লোকগাথা শৈশবকাল থেকেই আমি শুনে এসেছি। এই অঞ্চলের লোকালয়, জনপদ, বনভূমি, নদনদী এখনো আমাকে মুগ্ধ করে। এই জেলার প্রত্নসম্পদ ও ইতিহাস সংগ্রহ করতে গিয়ে বিগত কালের মানুষের জীবনযাপনের অনেক গল্পের উপাদান পেয়েছি। সেই লোককাহিনি লোকমুখে লোকগাথা হয়ে আছে।

বক্ষ্যমাণ উপন্যাসে আমি সেইসব মানুষের কথা বলেছি এবং শিল্পরূপ দিয়েছি। ২০১২ সালে ঢাকা থেকে প্রকাশিত পাক্ষিক সময়ের বিবর্তন নামক একটি পত্রিকা ধারাবাহিকভাবে একটি উপন্যাস লেখার জন্য আমাকে অনুরোধ জানায়। সেই সময় আমার মনে উল্লাসিত হয়ে ওঠে বিগত কালের গর্ভে চাপা পড়ে যাওয়া সেইসব কিংবদন্তিতুল্য মানুষের কথা। এই যশোরহ-ভূমিতে একদিন তাঁরা জীবন্ত ছিলেন। আজ অভীত হয়ে গেছেন। কেউ আজ তাদের স্মরণ করেন না। জানেন না তাদের জাগরণ ও সংগ্রামের কাহিনি। তাঁরা প্রত্যেকেই ছিলেন কৃতী পুরুষ। ব্যক্তি হিসেবে তাঁরা যে কর্মসাধনার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন, তার কোনো চিহ্ন আজ পাওয়া যায় না। সেই কৃতী পুরুষদের চলাচলের পথ ছিল কণ্টকাকীর্ণ ও দুর্গম।

এই উপন্যাসে আমি সেই মানুষদের কথা বলেছি। তাঁদের কীর্তিকলাপ ও সংগ্রামমুখর জীবনের কাহিনি আজ রূপকথার মতো। শুধু তাই নয়- ধূলায় ধূসরিত হয়ে আছে। এই উপন্যাসে তাঁদেরকে আমি পরিপূর্ণভাবে চিত্রিত করতে পারিনি। এটা করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে তাঁরা যে একদিন রক্তমাংসের মানুষ ছিলেন- তার প্রামাণিক তথ্য এই উপন্যাসের মধ্যে লিপিবদ্ধ করেছি। কারণ তাঁরা আমার কাছে কল্পনার নন- বাস্তব মানুষ। এই বাস্তব মানুষ যে সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থার মধ্যে বসবাস করতেন, সেই অতীত সমাজটাও আজ আমাদের কাছে অপরিচিত হয়ে আছে এবং অন্ধকারে ঢাকা পড়ে আছে।

উপন্যাসটি লেখার সময় ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়গুলো ছিল, তা অবিকল তুলে ধরার ব্যাপারে কোনোরকম কার্পণ্য করিনি। যেন কেউ মনে না করেন, ঘটনার পরিপ্রেক্ষিত কাল্পনিক, মনগড়া কিংবা বানানো।
মানুষের ইতিহাস সমাজ ও অর্থনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত। অর্থনীতি হচ্ছে মূল চালিকাশক্তি। যখন প্রগতির চাকা পশ্চাতের দিকে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা দেখা দেয়, তখনই গোঁড়ামি ও ধর্মের নামে মানুষের মধ্যে প্রতিক্রিয়াশীল চক্র বিভেদ তৈরি করে। এই উপন্যাসের মধ্যে এই প্রতিক্রিয়াশীলতার বিষয়টিও স্পষ্ট করে তুলে ধরা হয়েছে।

অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন, উপন্যাসে তথ্য-উপাত্তের কী প্রয়োজন আছে? জবাবে এইটুকু বলতে চাই যে, এই উপন্যাসটি কল্পকাহিনি নয়— এতে ঘটনাগত কাহিনি প্রাধান্য পেয়েছে। প্রতিটি চরিত্র বাস্তব এবং অস্তিত্বসম্পন্ন। যারা এই উপন্যাসের মানুষ— তাঁরা ছিলেন সকলেই আমাদের পূর্বপুরুষ। বর্তমান আমরা তাদের উত্তরসূরি। একজন উত্তরসূরি হিসেবে পূর্বপুরুষের কৃতকর্মের ইতিবৃত্ত এই উপন্যাসে মূলত তুলে ধরা হয়েছে।
হোসেনউদ্দীন হোসেন
কৃষ্ণনগর, ঝিকরগাছা

কালান্তরের রূপকথা প্রকাশ হবে প্রতি বৃহষ্পতিবার রাত ০৮:৩০ এ। চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

ট্যাগ সমূহ

ঝিকরগাছার ইতিহাস, ঝিকরগাছা উপজেলার ইউনিয়ন, ঝিকরগাছা খবর, গদখালি ঝিকরগাছা, ঝিকরগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান, ঝিকরগাছা পোস্ট কোড, ঝিকরগাছা এমপি, ঝিকরগাছা আবহাওয়া, ঝিকরগাছা উপজেলা ম্যাপ, ঝিকগাছার ঐতিহ্য, পানিসারা, ঝিকরগাছা পৌরসভা, ঝিকরগাছা দর্শনীয় স্থান, ঝিকরগাছা বাজার।