বই : লীলাবতী
লেখক : হুমায়ূন আহমেদ
ধরণ : উপন্যাস
ককথাসাহিত্যে হুমায়ূন আহমেদ এক অনন্য নাম। তার অন্যান্য লেখার মত এই লেখাটাও অনেক সুপাঠ্য ও সাবলীল। সবসময়ই মনঃস্তাত্ত্বিক বিষয়গুলোকে খুব গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি তার বেশিরভাগ লেখায়। 'লীলাবতী' নামক উপন্যাসেও তার প্রকাশ মেলে।
এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র 'লীলাবতী'। কিন্তু কেন যেন আমার কাছে সিদ্দিকুর রহমানকে মুখ্য বলে মনে হয়েছে। তার সীদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা, তার কর্মকাণ্ড অন্যরকম। তবে তিনি নিঃসন্দেহে একজন সৎ এবং ভালো মানুষ। তিনি সারাজীবন গ্রামে থেকেছেন কিন্তু তার চিন্তাভাবনা বেশ প্রগতিশীল। তিনি সবকিছুকে যুক্তি দিয়ে বিচার করেন।
উপন্যাসের মুখ্য চরিত্র লীলাবতী বেশ আধুনিক এবং উন্নত চিন্তার অধিকারী। যেকোন পরিস্তিতিকে কিভাবে সামাল দিতে হয় সেটা সে জানে। সে তার বাবাকে দেখতে এসেছিল একদিনের জন্য। কিন্তু মায়ার জালে সে আটকে পড়ে সেই বাড়িতে। বাড়িতে অনেক লোক থাকলেও উপন্যাসের শেষ পর্যায়ে সে সম্পুর্ণ একা হয়ে যায়। তার কাধে তখন তার বাবার সবকিছু দেখভালের দায়িত্ব এসে পড়ে। সে সম্পুর্ণ একলা হয়ে গেলেও সে অপেক্ষায় থাকে যে একদিন সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
এই উপন্যাসে আমার কাছে সবচেয়ে মজার চরিত্র মনে হয়েছে মঞ্জু মামার চরিত্র। সে নির্বিকারে দুজন বাচ্চা মেয়ের সাথে মিশে যায়। তাদেরকে নিয়েই যেন তার পৃথিবী তৈরি হয়ে যায়। পার্থিব কোন কিছুর প্রতি তার কোন মোহ থাকে না। শুধুমাত্র তার আশেপাশে যারা আছে তাদেরকে হাসিখুশি রাখাই যেন তার দায়িত্ব হয়ে পড়ে। সে অবলীলায় অন্যের সন্তানকে নিজের মনে করে মানুষ করে এবং এতে তার কোন আক্ষেপ থাকে না।
এখানে রমিলা নামক চরিত্রটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। মাঝে মাঝে তার সব ভবিষ্যৎবাণী যেন সত্য বলে মনে হয়। কিন্তু সবসময় তা সঠিক হয় না। এখানে হুমায়ুন আহমেদ অত্যন্ত দুরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন।
'লীলাবতী' উপন্যাস ভালো না খারাপ সেই তর্কে যাব না। তবে হুমায়ুন আহমেদ এর সব লেখার মত এই লেখা পড়েও অনেক মজা পেয়েছি।
লীলাবতী বইটি ডাউনলোড (pdf) করে পড়তে ক্লিক করুন নিচের ডাউনলোড বাটনে