অন্ধধর্ম ভক্তি এবং সামাজিক গোঁড়ামির বিরুদ্ধে প্রবাদ পুরুষ ছিলেন আবুল হুসেন। তার দর্শনের মূল নির্যাস ছিলো মুক্ত চিন্তার অনুশীলন। আবুল হুসেনের সাহিত্য কর্মের লক্ষ্য ছিলো হিন্দু মুসলমানকে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করে বাংলা সাহিত্যের এক নতুন দিক উন্মোচন করা। সেই লক্ষ্যে ১৯২৬ সালের ৬ই জানুয়ারি ড.মুহাম্মাদ শহীদুল্লার নেতৃত্বে গঠিত “মুসলিম সাহিত্য সমাজ” নামক সংগঠনে যোগ দেন তিনি। সংগঠনটির উদ্দেশ্য ছিলো সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে বাংলার হিন্দু মুসলমানকে ঐক্যবদ্ধ করে সমাজে বিদ্যমান অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারকে দূর করা।
মননশীল ও সমাজ মনষ্ক প্রাবন্ধিক হিসাবে আবুল হুসেনের সুখ্যাতি ছিল। তিনি একাধারে বাংলা ও ইংরেজিতে লিখে গেছেন। তৎকালীন সমাজের আলোড়ন সৃষ্টিকারী “শিখা” পত্রিকা সম্পাদনা-প্রকাশনা তার সাহিত্যধারা মুল্যায়নকে সহযোগিতা করে। তার প্রকাশিত রচনার মধ্যে রয়েছে মুসলিম কালচার, নেশার ফের, মিনি, প্রিতির কুড়ি, দ্যা প্রবলেম অব রিভার্স ইন ব্যাঙ্গল, সবজানতা, রুদ্ধ ব্যথা প্রমুখ। আবুল হুসেনের মৃত্যুর পর তার প্রকাশিত এবং অপ্রকাশিত সকল লেখাগুলোর পাণ্ডুলিপি মর্ডান লাইব্রেরীতে সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু ১৯৪৭ সালে কোলকাতায় সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামায় মর্ডান লাইব্রেরীতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ফলে নষ্ট হয়ে যায় সংরক্ষিত লেখা সমূহ। আবুল হুসেন ১৯৩৮ সালের ১৫ই অক্টোবার পাকস্থলীর ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৪১ বছর ৯ মাস ৯ দিন বয়সে ইহলোক ত্যাগ করেন।